২০২৩ সালকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে গিয়ে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। নিরাপত্তার জন্য রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছেন পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা। অনেক এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আজ সন্ধ্যার পর থেকেই পুরো ঢাকা থাকবে কড়া নিরাপত্তায়। ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে নিষিদ্ধ করা হয়েছে পটকা ও আতশবাজি ফুটানো। সেই সঙ্গে ফানুস উড়ানো এবং সভা-সমাবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, গুলশান ও হাতিরঝিলসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে নিয়ন্ত্রিত করা হবে যানবাহন চলাচল।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় নগরবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিভিন্ন আনন্দ-উৎসব করতে পারবেন। তবে আনন্দ-উৎসব উদযাপনের নামে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি, নিজস্ব সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ঐতিহ্যবিরোধী কর্মকাণ্ড চালানো যাবে না। পটকাবাজি, আতশবাজি, ফানুস উড়ানো, অশোভন আচরণ, বেপরোয়া গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানো যাবে না।
তিনি আরও বলেন, ঢাকার সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার পাশে বা মোড়ে, ফ্লাইওভার, রাস্তায় এবং প্রকাশ্য জায়গায় কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ বা জমায়েত করা যাবে না। খোলা জায়গায় নববর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠান, নাচ, গান ও কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। পটকা, আতশবাজি ও ফানুস ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ থাকবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে বহিরাগত ব্যক্তি ও যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না।
শুধুমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত যানবাহন চলাচল করতে পারবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ আজ রোববার রাত ৮টার মধ্যে নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করবেন। রাত ৮টার পর প্রবেশের ক্ষেত্রে পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় রাত ৮টার বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। এসব এলাকার বাসিন্দাদের নির্ধারিত সময়ের পর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং দিয়ে পরিচয়পত্র দেখিয়ে প্রবেশ করতে হবে। গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যারা বসবাস করেন না, তাদের এসব এলাকায় যাতায়াত না করতে অনুরোধ করা হয়েছে। হাতিরঝিল এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে কোনো সমাবেশ বা অনুষ্ঠান করা যাবে না। কোনো যানবাহন থামিয়ে অথবা পার্কিং করে কেউ অবস্থান করতে পারবেন না। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকার বাসিন্দাদের রোববার রাত ৮টার মধ্যে নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করতে অনুরোধ করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা ৬টার পর ঢাকার কোনো বার খোলা রাখা যাবে না। আবাসিক হোটেলগুলো সীমিত আকারে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান করতে পারবে। রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন ১ জানুয়ারি ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকার আবাসিক হোটেল, রেঁস্তোরা ও উৎসবস্থলে সব ধরনের বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বহন নিষিদ্ধ থাকবে।
যেসব রাস্তায় চলাচল করা যাবে এদিন রাত ৮টা থেকে পরদিন ১ জানুয়ারি ভোর ৫টা পর্যন্ত গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় যানবাহনযোগে প্রবেশের জন্য কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। রাত ৮টা থেকে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে মহাখালী এলাকা-ফিনিক্স রোড ক্রসিং, বনানী ১১ নম্বর রোড ক্রসিং, চেয়ারম্যান বাড়ি ক্রসিং, ঢাকা গেট, গুলশান শুটিং ক্লাব, বাড্ডা লিংক রোড, ডিওএইচএস বারিধারা-ইউনাইটেড হাসপাতাল ক্রসিং ও নতুন বাজার ক্রসিং এলাকা দিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। শুধুমাত্র উল্লেখিত এলাকা থেকে বের হওয়ার জন্য এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন ১ জানুয়ারি ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যাওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী ব্যতীত সকল ব্যক্তি ও যানবাহন কেবলমাত্র পুরনো হাইকোর্ট- দোয়েল চত্বর-শহীদ মিনার-জগন্নাথ হলের দক্ষিণ গেট-পলাশী মোড় দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। এসব এলাকায় এলাকায় প্রবেশের জন্য অন্যান্য ক্রসিং বন্ধ থাকবে। রোববার রাত ৮টা থেকে শাহবাগ, নীলক্ষেত ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং, বক্শী বাজার ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং এবং চাঁনখারপুল, শহীদুল্লাহ হল ক্রসিং দিয়ে কোনো প্রকার যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না।